Header Ads

Header ADS

হাতি-ঘোড়া আর হেলিকপ্টারে চড়ে কনের বাড়িতে বর

বছরের শেষে দেশে আলোচিত বিয়ে। বিয়ের জন্য হাতি, ঘোড়া হেলিকপ্টার সবই ছিল। এ বিয়ে দেখতে উৎসুক জনতা বিয়ে বাড়িতে ভিড় করে। চাঁদপুরের সফটওয়্যার প্রকৌশলী শামসুল আরেফীন খাঁন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বিয়ে করতে কনের বাড়িতে এলেন হেলিকপ্টারে করে। এরপর হেলিকপ্টার থেকে নেমে শ্বশুরবাড়িতে যান হাতিতে চেপে।
হাতির ওপর চড়ে কনের বাড়িতে যাচ্ছেন বর

শুক্রবার এ রাজকীয় বিয়ে দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছে। জানা যায়, বগুড়ার সোনাতলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাবিলপুর গ্রামের মৃত আলহাজ শামসউদ্দিন আকন্দের পুত্র জাকির হোসেন বেলালের কন্যা সফটওয়্যার প্রকৌশলী ফারজানা আকতার। তার বিয়ের সম্পর্ক ঠিক হয় চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার খাঁনবাড়ি পূর্ব নাউরী এলাকার প্রবাসী শায়েস্তা খাঁনের একমাত্র পুত্র সফটওয়্যার প্রকৌশলী শামসুল আরেফীন খাঁনের সাথে।
শুক্রবার বর শামসুল আরেফীন খাঁন সকাল ১১ টায় হেলিকপ্টারে করে বগুড়ার সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে অবতরণ করেন। এরপর ওই মাঠ থেকে জামাই বাবুকে হাতিতে চেপে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে শ্বশুরবাড়ি কাবিলপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় বাদ্য-বাদকের একটি দল ছিল।
বিভিন্ন বয়েসী হাজার হাজার উৎসুক জনতা রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে বরের হাতিতে চরে বিয়ে করতে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন। বরযাত্রী ছিলেন প্রায় দেড় শতাধিক। বিয়ের বর যাত্রীরা বিয়ের আগের দিন বৃহস্পতিবার বগুড়ায় এসে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রী যাপন করেন।
শুক্রবার সকালে ১৫টি মাইক্রোযোগে বিয়ে বাড়িতে আসেন বর যাত্রীরা। বর হাতি থেকে নেমে স্থানীয় মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে। এরপর বিয়ের আসরে বসেন। স্থানীয় কাজী হাবিবুর রহমান হাবিব বিয়েটির রেজিস্ট্রি করেন। এসময় সোনাতলা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বিয়ে পড়ান। বিয়েতে কাবিন ধার্য করা হয় ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
হেলিকপ্টারে চড়ে কনের বাড়িতে এলেন বর, পাশে কনে

বিয়েতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার লোকজনকে আমন্ত্রণ করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন- সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির, সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল করিম শ্যাম্পো, মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নান্নুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আত্মীয়- স্বজন, গ্রামবাসী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
রান্নাবান্না করা হয় হরেক রকমের খাদ্য। এর মধ্যে ছিল, বিরিয়ানি, কাচ্চি বিরিয়ানি, মোরগের রোষ্ট, খাসির মাংস, গরুর মাংস, সালাদ, দই, বোরহানি, মিষ্টি, সফট ড্রিংকসসহ মাংশের বিভিন্ন পদ। রান্না বান্না করেন মোকামতলার মোহাম্মদ মুঞ্জু বাবুর্চী। রান্নার কাজ করেন প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি।
বাবুর্চী মুঞ্জু জানান, ২০ মণ চাল, ৪টি গরু, ৮টি খাসি রান্না করা হয়েছে। এছাড়াও সাড়ে ৩ হাজার মুরগির রোস্ট করা হয়েছে।
সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়া গ্রামের আমন্ত্রিত অতিথিরা জানান, স্বাধীনতার পর এটাই প্রথম হাতি ঘোড়া ও হেলিকপ্টারে করে রাজকীয় বিয়ে দেখা। এর আগে ওই উপজেলায় কোনো বর হেলিকপ্টারে করে এসে বিয়ে করার ঘটনা ঘটেনি। এটাই প্রথম।
কনের বাবা জাকির হোসেন বেলাল জানান, তার ৪ কন্যার মধ্যে ফারহানা আকতার জৈষ্ঠ্য। সে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল তার মেয়েকে বিয়ে করতে বর আসবে হেলিকপ্টারে করে। হাতি-ঘোড়া বাদ্য বাজিয়ে অনেক আনন্দ করে বিয়ে দেয়ার কথা বলেছিল।
বর শামসুল আরেফিন খান জানান, তিনি ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার পিতা জাপান প্রবাসী। তার একটি ছোট বোন রয়েছে। বছর খানেক আগে তার বিয়ে হয়েছে।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা ৪টার দিকে বর-কনে, বরের মা ও বোন আবারও হেলিকপ্টারে চেপে সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে রওনা দেন। এসময় কয়েক হাজার উৎসুক জনতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.